মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় তৃতীয় দফায় পাঁচদিনের রিমান্ড শুনানির জন্য চিত্রনায়িকা পরীমনিকে আজ আদালতে হাজির করা হয়। কাঠগড়ায় উঠেই অঝোরে কাঁদতে থাকেন পরীমনি। বারবার তাকে হাত দিয়ে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত এ নায়িকাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে আনা হয়। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে নেয়া হয় আদালতের কাঠগড়ায়।

এর আগে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়। গত ১৬ আগস্ট মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পরীমনিকে আরো ৫ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তাফা। আদালত শুনানির জন্য আজ (বৃহস্পতিবার) দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ১৩ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় ছয় দিনের রিমান্ড শেষে পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুকে আদালতে হাজির করা হয়।

এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা। এ সময় আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর পরীমনিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে, ৫ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগীকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থানার মামলায় তাদের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১০ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুর দ্বিতীয় দফায় দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ৪ আগস্ট ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে’ অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। অভিযানে নতুন মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধারের কথা জানায় র‌্যাব।

এছাড়া বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়। এরপর রাত ৮টা ১০ মিনিটে পরীমনিকে তার বাসা থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে র‌্যাব সদরদপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে গাড়িটি কুর্মিটোলায় র‌্যাব সদরদফতরে পৌঁছায়। সেখানে রাত ১২টা পর্যন্ত পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। পরদিন ৫ আগস্ট বিকেল ৫টার পর পরীমনিসহ চারজনকে বনানী থানায় নিয়ে আসা হয়। এরপর র‌্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমনি ও তার সহযোগী বিপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলায় করে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদক সেবন করতেন। এমনকি এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন তিনি। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করেন। তিনি বাসায় নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের সরবরাহ করতেন এবং পার্টিতে অংশ নিতেন।